ক্লিন ইমেজের আ.লীগ নেতারা যোগ দিলে জাপায় মনোনয়ন পাবেন: কো-চেয়ারম্যান
জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যারা ক্লিন ইমেজের এবং জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত নন, তারা যদি জাপায় যোগ দেন তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের আট জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জাপা ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে উত্তেজনা রংপুর অঞ্চলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। গণঅধিকার পরিষদ জাপার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে, এটিকে ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগী’ দল হিসেবে আখ্যায়িত করে। এই প্রেক্ষাপটে শনিবারের সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জাপার কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা।
আওয়ামী লীগকে সরকার জুলাই গণহত্যার অভিযোগে নিষিদ্ধ করেছে। অভিযুক্তদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা নেই।
মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, সারা দেশে বহু আওয়ামী লীগ সমর্থকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা সহিংসতার অভিযোগ নেই। যদি এমন মানুষ জাপায় যোগ দেন, তবে মনোনয়নে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘কোনো আওয়ামী লীগ নেতা যদি মামলা-মোকদ্দমাহীন হন এবং আমরা তাকে উপযুক্ত প্রার্থী মনে করি, তাহলে কেন তাকে মনোনয়ন দেব না? অবশ্যই দেব। প্রার্থী সংকট কাটাতে আমাদের এ পথ নিতে হবে। আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেব। যেখানে শক্তিশালী, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থী পাওয়া যাবে এবং সহিংসতার কোনো অভিযোগ থাকবে না, সেখানেই তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। যেমন ফরিদপুর বা গোপালগঞ্জের মতো জেলায়, যেখানে আওয়ামী লীগের ব্যাপক সমর্থন আছে, সেখানে পরিষ্কার ভাবমূর্তির কেউ জাপায় যোগ দিলে তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে।’
কো-চেয়ারম্যান আরও বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিকে অবশ্যই প্রো-ডেমোক্রেসি শক্তিগুলোকে রক্ষা করার ভূমিকা নিতে হবে, যারা জনতা নির্যাতন বা সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত নয়। নাহলে বিএনপি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি জাপা নির্বাচনে না যায় অথচ ইসলামী ঐক্য জোট, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের মতো দলগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বিএনপি অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে বিএনপি একা হয়ে পড়বে। “একতরফা কোনো নির্বাচন দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। স্পষ্টতই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিগুলো বিএনপিকে বিপদে ফেলতে চাইছে,” যোগ করেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির। বক্তব্য দেন মহানগর কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লোকমান হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম, জেলা কমিটির সদস্যসচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
সভায় রংপুর মহানগর ও জেলা শাখা ছাড়াও গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে