Views Bangladesh Logo

এবার রংধনু গ্রুপের রফিকুলের হোটেল জব্দ

ঢাকার বনানীতে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের হোটেল ‘ইউনিক রিজেন্সি’ জব্দ এবং সমবায় ব্যাংকে রাখা তার ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গুলশান থানায় করা মানিলন্ডারিংয়ের মামলায় আদালতের আদেশে এই অর্থ অবরুদ্ধ ও সম্পদ জব্দ করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।

৭ আগস্ট রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবং তার ‘স্বার্থসংশ্লিষ্ট’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলাটি করে সিআইডি। সেদিনই তাদের ১৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং যমুনা ফিউচার পার্কে এক লাখ বর্গফুটের বাণিজ্যিক জায়গা আদালতের আদেশে জব্দ করে সংস্থাটি।

সিআইডি’র সোমবারের (১ সেপ্টেম্বর) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মামলাটির তদন্তের ধারাবাহিকতায় বনানী ১৭ নম্বর রোডে ৬ দশমিক ২ জমির ওপর নির্মিত ৯ তলা ভবনসহ হোটেল ইউনিক রিজেন্সি এবং সমবায় ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে জামানত হিসাবে রাখা ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার সন্ধান পায় সিআইডি। পরে আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি সিআইডি রাজধানীর ওই হোটেল জব্দ করে এবং ওই অর্থ অবরুদ্ধে করে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এতে বলা হয়, ‘মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, অর্থের উৎস অনুসন্ধান, বিদেশে পাচার করা সম্পদের সন্ধান ও অপরাপর জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট’।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, রফিকুল রংধনু বিল্ডার্সের নামে ইসলামী ব্যাংকের বারিধারা শাখা থেকে ৪০০ কোটি টাকা, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ২০০ কোটি টাকাসহ আরও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ‘প্রতারণা এবং জালিয়াতির’ মাধ্যমে ঋণ নেন। তবে ঋণের টাকা পরিশোধ না করে বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ এবং বিনিয়োগ করেছেন তিনি।

২০২২ সালের ৮ মার্চ রফিকুলের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দিপু বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে ৭ দশমিক ৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। পরে একই জমির ৬ দশমিক ৩৩৭৫ একর অংশ ২০২২ সালের ১ জুন ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের (বসুন্ধরা গ্রুপ) কাছে ফের বিক্রি করে ‘প্রতারণামূলকভাবে’ পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ লাখ টাকা অর্জন করেন তারা।

এছাড়া পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালি ভরাটের ‘ভুয়া কার্যাদেশ’ দেখিয়ে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তারা ‘আত্মসাৎ’ করেন এবং ‘ভুয়া মূল্যায়ন প্রতিবেদন’ দেখিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বারিধারা শাখা থেকে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

সিআইডির অভিযোগ, রফিকুল বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা পরিশোধ না করে অর্থপাচারের মাধ্যমে ২০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে ক্যারাবিয়ান দ্বীপদেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্ব নেন।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের অক্টোবরে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ