জাকসু নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করে মিছিল করেছে ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন এলাকা থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সিনেট ভবন, ট্রান্সপোর্ট এলাকা ঘুরে চৌরঙ্গীতে শেষ হয়।
এ সময় ‘প্রহসনের জাকসু, মানি না মানবো না’, ‘জিয়ার সৈনিক, এক হওয়াও লড়াই করো’, ‘বয়কটা বয়কট, জাকসু বয়কট’- এরকম স্লোগান দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
মিছিলের পর ছাত্রদল নেতারা প্রহসনের জাকসু নির্বাচন বাতিল এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষা নির্বাচনের দাবি জানান।
এদিন সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে ৫টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে জাকসু নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। জামায়াতের সরবরাহ করা ব্যালটে ভোটগ্রহণ, যথাসময়ে কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেয়া, প্রার্থীদের কেন্দ্র পরিদর্শন করতে না দেয়া, ফজিলাতুন্নেছা হলে জাল ভোট এবং ভিপি প্রার্থীকে হেনস্থার অভিযোগ করে ছাত্রদল।
এর আগে বেলা ১২টার পর ফজিলাতুন্নেসা হলে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীর প্রবেশকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বাকবিতণ্ডা। ঘণ্টাখানেক বন্ধ থাকে ভোটগ্রহণ। নারী শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পুরুষ প্রার্থী প্রবেশ করা নিয়ে ওঠে নিরাপত্তা শঙ্কার অভিযোগ। আর ছাত্রদল বলছে, শিবির কেন্দ্রে আগে ঢুকেছে--এমন খবর পেয়েই তারা অভিযোগ জানাতে গেছেন।
একই কারণে উত্তাল হয়ে ওঠে তাজউদ্দীন হলের ভোটকেন্দ্র। ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ হলেও কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে ভোটগ্রহণ। উত্তেজনা দেখা যায় জাহানারা ইমাম হলেও।
সন্ধ্যা ৬টার পর শুরু হয় আনুষ্ঠানিক ভোট গণনা। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে গণানা করায় ফলাফল আসতে অপেক্ষা করতে হতে পারে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত।
এদিকে, নির্বাচন চলাকালে ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহানকে আটক করা হয়েছে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা ও ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা।
ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেন (টিক চিহ্ন দিচ্ছেন)।
জাকসুর মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ ছাত্রী, বাকি ৭৫ শতাংশই ছাত্র। ভিপি পদে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মেয়ে দুজন। আর চারটি পদে কোনো মেয়ে প্রার্থীই নেই।
সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্রী। আর মেয়েদের হলগুলোর পাঁচটিতে ১৫ পদে প্রার্থীই নেই। নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নেয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে