এখনো নেভেনি কেমিক্যাল কারখানার আগুন, ধোঁয়ায় অসুস্থ অর্ধশতাধিক
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে ২৪ ঘণ্টা পরও পুরোপুরি নেভানো যায়নি পোশাক ও কেমিক্যাল কারখানার আগুন। ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে উঠছে ধোঁয়া। বাতাসে ভেসে আসা কেমিক্যালের বিষাক্ত গন্ধে পাশের একটি ভবনের অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আশপাশের অফিস ও কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে খোলা হলেও পরে ছুটি দেয়া হয়েছে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
ছড়িয়ে পড়া কেমিক্যালের ধোঁয়ায় রাইজিং গ্রুপসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি কারখানার ৫০ জনেরও বেশি শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের বেশিরভাগকে নেয়া হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও কসমিক ফার্মা কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে আরও সাতটি ইউনিট যোগ দিয়ে রাত নয়টার দিকে পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী রাতে সংবাদ সম্মেলনে জানান, পোশাক কারখানা ভবনটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ভবনের নিচতলায় আগুনের তীব্রতা এবং ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালা দিয়ে বন্ধ থাকায় অনেকেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ফলে ওই দুই তলায় আটকে আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন তারা।
তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত কেমিক্যাল গোডাউনে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।
তিনি জানান, আজই আগুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বুয়েটের প্রতিনিধিরা। তারা দেখবেন, সেখানে কী ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মহাপরিচালক জানান, এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। গোডাউনে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে। কেমিক্যালের আগুন আর অন্য আগুনের মধ্যে পার্থক্য আছে। কেমিক্যালের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
আগুন নেভানো হয়েছে উল্লেখ করে জাহেদ কামাল বলেন, ‘তবে আগুন আবারও জ্বলে উঠতে পারে। আমরা সতর্ক আছি। আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ মনে হলেও এখানে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, অনেক অনুমোদনহীন কেমিক্যাল গোডাউন গড়ে উঠেছে। টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনে তিনজন ফায়ারফাইটার নিহত হয়েছেন। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না।’
কোনো এলাকায় অনুমোদনহীন গোডাউন গড়ে উঠলে সেটির বিষয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। সচেতনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে যেন সবাই কেমিক্যাল গোডাউন স্থাপন করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে