‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত থেয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক উচ্চপর্যায়ের ‘গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে’ গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে থেয়ারওয়ার্ল্ডের ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয়। শিক্ষা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে পথপ্রদর্শক ভূমিকা এবং মানবকল্যাণে আজীবন প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা থেয়ারওয়ার্ল্ড বিশ্বব্যাপী শিশুদের শিক্ষা সংকট নিরসন ও নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা বিকাশে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষাবিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং থেয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ার ও গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের নির্বাহী চেয়ার সারা ব্রাউন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার রূপান্তরমূলক শক্তিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডিকেও সম্মাননা দেয়া হয়। তবে দারিদ্র্য দূরীকরণে মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রম এবং শিক্ষাকে তার কেন্দ্রীয় অংশে অন্তর্ভুক্ত করে আজীবন সংগ্রামের কারণে ইউনূসের পুরস্কার বিশেষ তাৎপর্য পায়।
পুরস্কার প্রদানকালে গর্ডন ব্রাউন বলেন, গত পঞ্চাশ বছরে দারিদ্র্যমুক্তির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের কোনো উদ্যোগ গ্রামীণ ব্যাংকের মতো কার্যকর ভূমিকা রাখেনি। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বিশ্বব্যাপী এক পথপ্রদর্শক হিসেবে আখ্যা দেন।
পুরস্কার গ্রহণের সময় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো ঋণও একটি মৌলিক মানবাধিকার। তিনি বলেন, ‘যদি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়, তবে পৃথিবীতে কেউ আর গরিব থাকবে না। আমি মাইক্রোক্রেডিটের প্যাকেজে শিক্ষাকে যুক্ত এবং নারীদের সহায়তা করেছি, যাতে তারা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারে।’
আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার আন্তঃসম্পর্ক তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মাইক্রোক্রেডিট ব্যবহার করে অসংখ্য নারী পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছেন এবং সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার প্রচলিত ধ্যানধারণার সমালোচনা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষা দিতে হবে। তিনি বলেন, “একজন শিশুর শেখা উচিত কীভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়।’
ড. ইউনূস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসাকে মানবকল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার শিক্ষা দিতে হবে। *“বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত এমন এক স্থান, যেখানে মানব সমস্যার সমাধান শুধু উৎসাহিতই নয়, প্রত্যাশিতও হবে। তার মতে, মানবসমাজের সব সমস্যারই ব্যবসায়িক সমাধান সম্ভব।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে