বগুড়ায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তান হারাল গর্ভবতী নারী
বগুড়ার নন্দীগ্রামে যৌতুকের দাবিকে কেন্দ্র করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে গর্ভের সন্তান হারানোর অভিযোগ করেছেন এক গর্ভবতী নারী। এ ঘটনায় গত রোববার (২০ জুন) নন্দীগ্রাম থানায় স্বামী আমিনুল ইসলামসহ তার পরিবারের সাতজন সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী রুমকি বেগম।
অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম বগুড়ার থালতা মাঝগ্রামের একরাম হোসেনের ছেলে। জানা গেছে, রুমকি বেগম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও জাদুঘর গেট এলাকার বাসিন্দা। মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে আমিনুল ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তাকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিয়ের পর থেকেই রুমকি তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছ থেকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন। নির্যাতন বন্ধ করতে তিনি পরিবারকে প্রায় তিন লাখ টাকা দিয়েছেন বলেও দাবি করেন। তবে তারপরও নিপীড়ন বন্ধ হয়নি।
রুমকি অভিযোগ করেন, গত ২৭ জুন তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় এবং চুল ধরে টেনে তার পেটের ওপর আঘাত করা হয়। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসকরা জানান, তিন মাসের বেশি বয়সী গর্ভের সন্তানটি মারা গেছে।
রুমকি বলেন, ‘তারা জানতো আমি গর্ভবতী ছিলাম, তারপরও তারা আমাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেঠছে। এটা প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও চারবার অভিযোগ জানিয়েছি। এবার তারা আমার অনাগত সন্তানকেই কেড়ে নিয়েছে। আমি কী অপরাধ করেছি? আমি একজন মা। আমি আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য বিচার চাই।’
এদিকে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা মীমাংসার চেষ্টা করছি।’
নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।‘
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে