Views Bangladesh Logo

নতুন টেলিকম নীতিমালা বিষয়ে বিএনপির উদ্বেগ

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রস্তাবিত ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি ২০২৫’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ উদ্বেগ জানান।

তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও প্রযুক্তি অগ্রগতির প্রসারে নীতিমালাটির উদ্দেশ্য প্রশংসনীয়।  তবে কিছু ধারা বড় মোবাইল অপারেটরদের বাড়তি সুবিধা দিতে পারে, যা ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। বিএনপি মনে করে, এমন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নীতি একতরফাভাবে বাস্তবায়ন না করে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তড়িঘড়ি করে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রস্তাবিত নীতিমালায় একাধিক খাতে মালিকানা রাখার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ফলে বড় মোবাইল অপারেটরদের একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এতে বাজারে প্রতিযোগিতা হ্রাস পাবে এবং ছোট উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বিএনপি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার ফলে ছোট ও মাঝারি টেলিকম অপারেটর বা আইএসপিগুলো আর্থিক অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে, কারণ নীতিমালায় তাদের দায়দায়িত্ব ও সক্ষমতা নিয়ে কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিদেশি মালিকানার সময়সীমা বা সীমাবদ্ধতা সম্পর্কেও নীতিতে কোনো নির্দিষ্টতা নেই, যা বিনিয়োগকারীদের মাঝে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।

নীতিমালায় আরও কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করে বিএনপি জানায়, উল্লম্ব ও সমান্তরাল মালিকানার বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা না থাকায় বড় কোম্পানিগুলো বাজারে আরও প্রভাব বিস্তার করতে পারে। মোবাইল অপারেটরদের ফাইবার-ভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ সংযোগ সেবার ক্ষেত্রেও কোনো পরিষ্কার সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। এতে বড় কোম্পানিগুলোর পক্ষে স্বচ্ছ প্রতিযোগিতা লঙ্ঘন করে সুবিধা নেয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় নতুন প্রযুক্তি, বিশেষ করে স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড বা অন্যান্য ডিজিটাল সেবা সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। ফলে, যারা নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।

বিএনপি দাবি করে, একক লাইসেন্স ব্যবস্থার ফলে আইএসপিগুলোকে সারাদেশে সেবা দিতে হবে এবং উচ্চমান বজায় রাখতে হবে—যা ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। এছাড়া, স্পেকট্রামের ওপর নির্ভরশীল এএনএসপি লাইসেন্স বড় কোম্পানিগুলোকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, বড় মোবাইল অপারেটরদেরকে এন্টারপ্রাইজ ব্রডব্যান্ড বাজারে প্রবেশের সুযোগ দিলে তারা দ্রুত অবকাঠামো ব্যবহার করে ছোট কোম্পানিগুলোর ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে। এতে বাজারে বৈষম্য বাড়বে এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত হবে।

মির্জা ফখরুল মনে করেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের উচিত হবে না একতরফাভাবে এমন নীতিমালা বাস্তবায়ন করা। সব পক্ষের মতামত নিয়ে অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিলে এই খাত সবার জন্য টেকসইভাবে এগোবে।


মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ