সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক কারাগারে
ঢাকার মিন্টো রোডে ‘সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি’ করার সময় আটক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
পুলিশ জানায়, ৫৫ বছর বয়সী এনায়েত করিম শনিবার সকালে ধরা পড়ে। পরে তাকে ঢাকার আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সোমবার তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “উল্লেখিত ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী। তার আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
রমনা মডেল থানার পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এনায়েত করিমের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করেছে। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। ১৯৮৮ সালে তিনি আমেরিকায় গেছেন এবং ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট পান। ৬ সেপ্টেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি কাতার এয়ারওয়েজে পৌঁছান। প্রথম দুই দিন হোটেল সোনারগাঁওয়ে ছিলেন, পরের কয়েক দিন গুলশানে অবস্থান করেন।
আবেদনে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশে আসার পর সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম দাবি করেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক এজেন্ট এবং বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থা নাজুক হওয়ায় নতুন জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে কাজ করার জন্য এসেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তার গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তার কাছ থেকে দুইটি আইফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে তার ফোন থেকে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য পাওয়া গেছে।
পুলিশের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, “এনায়েত করিম ধর্তব্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকার যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ রয়েছে। তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে অন্যান্য সন্দেহভাজন এবং ষড়যন্ত্রে জড়িতদের শনাক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে।”
আদালতে প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকার মহানগর হাকিম দিলরুবা আফরোজ তিথি এনায়েতকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন এবং সোমবার তার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় সরকারের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা রক্ষা করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রাখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে