সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জিততে পারল না বাংলাদেশ
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপের ম্যাচ ঘিরে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ দর্শকপূর্ণ জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে তারা। ফলে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের অর্জন একমাত্র পয়েন্টই। এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যে লক্ষ্য বাংলাদেশ নির্ধারণ করেছিল, সেই সমীকরণ আরও কঠিন করে ফেললেন হামজারা। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ৯ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে, ঢাকার মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ।
ভুটান ম্যাচের একাদশ থেকে তিনটি পরিবর্তন এনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে বেঞ্চে রেখে, কানাডা-প্রবাসী শমিত সোমকে একাদশে রাখেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। এই ম্যাচ দিয়েই লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হলো কানাডিয়ান লিগে খেলা এই মিডফিল্ডারের। ভুটান ম্যাচের গোলদাতা সোহেল রানার বদলে মোহাম্মদ হৃদয় এবং লেফট-ব্যাক তাজ উদ্দিনের জায়গায় শাকিল আহাদ তপুকে একাদশে রাখা হয়।
ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি আসে সিঙ্গাপুরের। ৯ মিনিটে হ্যারিস স্টুয়ার্টের লং থ্রো-ইনে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে, বল চলে যায় দূরের পোস্টের কাছে। সেখানে সন উই-ইয়াং পা ছোঁয়ালেও পোস্টের মধ্যে রাখতে পারেননি। ১৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে রাকিব হোসেনের দুর্বল শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে সরাসরি গোলকিপারের কাছে চলে যায়। পরের মুহূর্তে ইখসান ফান্দির হেড পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। সে শট লক্ষ্যে থাকলে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুলের কিছুই করার ছিল না।
২৮ মিনিটে চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে যান রক্ষণভাগের নির্ভরযোগ্য কাজী তারিক রায়হান। চিকিৎসা নিয়ে আবার মাঠে ফিরলে স্বস্তি ফেরে বাংলাদেশের শিবিরে। দুই মিনিট পর বড় সুযোগ পায় সিঙ্গাপুর। বাম দিক দিয়ে ইখসান ফান্দির শট দক্ষতায় রুখে দেন মিতুল মারমা। এরপর পাল্টা আক্রমণে ওঠে বাংলাদেশ। শমিতের রক্ষণচেরা পাসে গতির অভাবে রাকিব বল ধরতে না পারলে গোলকিপার তা নিয়ন্ত্রণে নেন।
৩৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে হামজার ফ্রি-কিক ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৪০ মিনিটে বড় সুযোগ পান ফাহামিদুল। বাম দিক দিয়ে এগিয়ে গিয়ে সময়ক্ষেপণের কারণে শেষ পর্যন্ত দুই ডিফেন্ডারের চাপে শটই নিতে পারেননি তিনি।
৪৫ মিনিটে গ্যালারি স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। হ্যারিসের শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে উঁচুতে উঠে গেলে, মিতুল পোস্ট ছেড়ে এসে বল ফিস্ট করেন। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বল চলে যায় হ্যারিস স্টুয়ার্টের পায়ে। তার ক্রস থেকে সাইড ভলিতে গোল করেন উই-ইয়াং। হামজা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলেও বল ইতোমধ্যেই গোললাইন পার হয়ে যায়। এতে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে ৫৩ মিনিটে ইখসান ফান্দির গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। তবে ৬৭ মিনিটে বাংলাদেশ একটি গোল শোধ করে। হামজার পাশ থেকে গোল করেন রাকিব হোসেন। এই গোলে উজ্জীবিত হয়ে একের পর এক আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ। তবে গোলপোস্টের সামনে ফিনিশিং ব্যর্থতার কারণে আর সমতায় ফিরতে পারেনি। ফলে আফসোসের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় লাল-সবুজের দলকে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে