জাপানের ১ কোটি শ্রম ঘাটতি পূরণে উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ

জাপানে ২০৪০ সালের মধ্যে সম্ভাব্য ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দেশটির শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী পাঠাতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাসের আয়োজনে ‘বাংলাদেশ-জাপানের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস’ শীর্ষক সেমিনার ও ম্যাচিং ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ঢাকায় প্রাপ্ত এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বাংলাদেশ দূতাবাস এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিলড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (জেআইটিসিও)-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী স্বাগত বক্তব্যে জাপানে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সেমিনারে প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও জাপানি নিয়োগকারী সংস্থা অংশ নেয়।
ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, '২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশে বর্তমানে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে, যা আগামী দুই দশক পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের এই বিপুল মানবসম্পদ জাপানের শ্রমবাজারের ঘাটতি পূরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।'

তিনি জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী তৈরি করতে দেশে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে; প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি ‘জাপান সেল’ গঠন করা হচ্ছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের জন্য সমন্বয় ও যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।

ড. ভূঁইয়া আরও বলেন, 'বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মীরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে সুনাম অর্জন করেছে। জাপানি ভাষা, সংস্কৃতি ও কাজের মান সম্পর্কে দক্ষতা বাড়াতে সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে।'

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।
সেমিনারে জেআইটিসিও’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিগেও মাতসুতোমি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা ও জাপানে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান ও জাপানি নিয়োগকারী সংস্থার মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।