গল টেস্ট
আক্ষেপের দিনে পাঁচশ হলো না
নাজমুল হোসেন শান্ত আক্ষেপ করতেন পারেন, আফসোস হতে পারে মুশফিকুর রহিমেরও৷ শেষবেলায় আত্মাহুতি দেওয়া লিটন দাসের কণ্ঠেও ঝরতে পারে হতাশা। খুব কাছে গিয়ে তিনজনই ছুঁতে পারেননি মাইলফলক৷
গল টেস্টে এমন আক্ষেপের দিনটাও বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচদিনের টেস্টের প্রথম ইনিংসে এখনও ৪৮৪ রান নিয়ে টিকে আছেন টাইগাররা।
গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বুধবার (১৮ জুন) ২৯২ রান নিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিনে তুলেছে আরও প্রায় দুইশ রান৷বৃষ্টি বাগড়ায় আড়াই ঘণ্টার মতো খেলা বন্ধ থাকার পর আলোক স্বল্পতায় পড়ে ম্যাচটি। শেষ বিকেলে ২৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় শান্ত ব্রিগেড। তাতেই অনিশ্চিত ইনিংসে ৫০০ রান৷
নয় উইকেট হারানো টাইগাররা বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) তৃতীয় দিনে নামবে ক্রিজে টিকে থাকা দুই টেলএন্ডার হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানাকে নিয়ে।
গলে টাইগারদের আক্ষেপের শুরু সকালেই। আগের দিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করা শান্ত ভুল করেছেন মাইলফলক ছোঁয়ার আগেই। ১৪৮ রানে একবার অবশ্য তার ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিল লঙ্কানরা৷ তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ১৪৮ রানেই থেমেছেন। ক্যারিয়ারে আরেকটি দেড়শ’ রানের কাছে গিয়ে থেমেছেন। হয়নি মুশফিককে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়াও।
শান্ত ফেরার পর আরেকটি বড় জুটি করেন মুশফিক। পেরোন ক্যারিয়ারের সপ্তম দেড়শ’ রান। তবে সেটিকে দুশ’ রানে রূপ দিতে পারেননি তিনি। ১০৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা মুশফিক ফেরেন ১৬৩ রানে। ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি হাঁকানোর আগে শান্তর সঙ্গে ৪৮০ বলে গড়েন ২৬৪ রানের জুটি। এরপর পঞ্চম উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ২৬৫ বল খেলে গড়েন ১৪৯ রানের জুটি।
অবশ্য শেষ বিকেলে লিটন দাসও ফিরেছেন হতাশ হয়ে। টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার নড়বড়ে নব্বইয়ের ঘরে আউট হন তিনি। মুশফিক ফেরার পর আর রান যোগ করতে পারেননি এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকেকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়েছেন ৯০ রান করা লিটন। নড়বড়ে নব্বুইয়ের শিকার এবারই প্রথমবার নয়। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৪ ও ২০২১ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯৫ রান করে আউট হয়েছিলেন তিনি।
এই তালিকায় বাংলাদেশি হিসেবে লিটনের ওপর আছেন মুশফিক। সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও চারবার হতাশ হয়ে থেমেছেন মি. ডিপেন্ডেবল।
মুশফিক-লিটনের পর ধস নামে টাইগারদের ইনিংসে। জাকের আলী (৮) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পেসার মিলান রথনায়েকের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেও স্ট্যাম্প হারান। রথনায়েকে বোল্ড করেন তাইজুল ইসলামকেও (৬)। পরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাইম হাসান (১১)। শেষ বিকেলে ২৬ রান তুলতে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লঙ্কানদের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছে থারিন্দু, মিলান এবং আসিথা৷ তাতেই ইনিংসে ৫০০ রানের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ।
অবশ্য দিনটি হিসেব-নিকেশে নিলে পারতপক্ষে টাইগারদেরই। কাল লঙ্কানদের কাটা হয়ে থাকা বাংলাদেশের একটি উইকেট তুলে ব্যাটিংয়ে নামতে হবে। ব্যাটিংয়ে পাচশ’ না হলেও বোলিংয়ে উজ্জ্বল থাকতে হবে হাসান-নাহিদকে। তবেই টেস্টের নাটাই আরও পক্ষে রাখতে পারবে সফরকারী বাংলাদেশ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে