বাংলাদেশি ৬ জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে মাছ ধরে ফেরার সময় ছয় বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি-এমন অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে ছেঁড়াদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ জানান, গভীর সাগর থেকে ফেরার পথে জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টেনে নেওয়া হয়। পরে তাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি খালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত অপহৃতদের সন্ধান মেলেনি, ফলে জেলে পল্লিগুলোতে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

অপহৃত ট্রলারের মালিক জাকির হোসেন জানান, শনিবার আবদুল করিম মাঝিকে সঙ্গে নিয়ে ছয় জেলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে বিপুল পরিমাণ মাছসহ পুরো ট্রলারই আরাকান আর্মির সদস্যরা নিয়ে গেছে। ট্রলারে থাকা এক জেলে ফোনে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

টেকনাফ সদর, জালিয়াপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন—এই চার এলাকার প্রায় ৮০০ ট্রলার নিয়মিত বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীতে মাছ ধরে। বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত আরাকান আর্মি মোট ৩৪৭ জন বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করেছে। এর মধ্যে ১৮৯ জন মুক্তি পেয়েছেন এবং ২৭টি নৌযান ফিরে এসেছে। বাকিদের উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে।

সীমান্ত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রায় ১১ মাসের যুদ্ধে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীকে সরিয়ে রাখাইনের ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় আরাকান আর্মি। সীমান্তে এখনো সংঘাত চলমান। অপহরণ ও গুলিবর্ষণের ঝুঁকিতে টেকনাফ–সেন্ট মার্টিন নৌরুটে দুই বছর ধরে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।