জাকসু নির্বাচনে আরেক নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন আরেক নির্বাচন কমিশনার ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। শুক্রবার রাতে অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগ করার পর শনিবার দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের এই সদস্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সমাজবিজ্ঞান ভবন কমিটির প্রতিনিধি ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তার। তিনি জানান, ভোট গণনার সময় যেসব অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন তার সুরাহা না করেই ভোট গণনা চালিয়ে যাচ্ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমি অনেকগুলো অনিয়ম দেখেছি। অনেকগুলো মারাত্মক ত্রুটি দেখেছি। এই ত্রুটিগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলে একমত পোষণ করলেও বিশেষ কিছু কারণে আমার যে মতামত তা গ্রহণে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। নির্বাচন কমিশন আমার মতামতের সুরাহা না করেই ভোট গণনা শুরু করে। তখন আমি আমার যে মত তা লিখিতভাবে জানিয়েছি। সময় খুব কম হওয়ায় আমার পক্ষে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। সে কারণে আমি নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১টি হলে জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের আগের দিন রাতে বাম সংগঠন ও ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট গণনার ওএমআর মেশিনের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক জামায়াত নেতা বলে অভিযোগ করেন। এরপর নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওএমআর মেশিনের পরিবর্তে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শিবিরের প্যানেল ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার দাবি করে এবং ব্যালট ছাপানোর প্রতিষ্ঠানকে বিএনপি নেতার বলে অভিযোগ করে।
ভোট গ্রহণের দিন বিকেল সাড়ে ৩টায় নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রদল এবং সন্ধ্যা সাতটায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় বাম সমর্থিত আরও চারটি প্যানেল। ভোটের দিন বিকেল সাড়ে তিনটায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ ওই ফোরামের আরও দুই শিক্ষক ভোট বর্জন করেন।
বিভিন্ন অভিযোগ ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিভিন্ন হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নেয়া হয় এবং রাত ১০টার পর ভোট গণনা শুরু হয়।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট আটটি প্যানেলের মধ্যে পাঁচটি প্যানেলের ৬৮ জন প্রার্থী ভোট বর্জন করলেও বাকি তিনটি প্যানেলের ১১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে রয়েছেন। দুই নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের ফলে নতুন করে সংকটে পড়েছে নির্বাচন কমিশন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে