৬ দিনের অচলাবস্থার পর আজ শুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা
টানা ছয় দিনের অচলাবস্থার পর আজ রবিবার থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। তিন দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলন, বদলি আদেশ এবং ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চলমান থাকলেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে পরীক্ষার সময় সব কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছে শিক্ষক সংগঠনগুলো।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কথা বিবেচনায় রেখে তালাবদ্ধ কর্মসূচি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরীক্ষাকালীন কোনো বিদ্যালয়ে শাটডাউন কার্যকর হবে না বলেও জানিয়েছে সংগঠন দুটি।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, 'শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান, তাদের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো অবস্থান আমরা নেব না। আন্দোলন চলবে, তবে পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে আন্দোলনের বাইরে থাকবে।'
এদিকে আন্দোলনে যুক্ত ৪২ জন সহকারী শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলির আদেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বদলির তালিকায় আন্দোলনের শীর্ষ পাঁচ নেতা—খায়রুন নাহার লিপি, মো. শামছুদ্দীন মাসুদ, মো. আবুল কাশেম, মো. মাহবুবর রহমান ও মো. মনিরুজ্জামান রয়েছেন।
নেতারা জানিয়েছেন, ১০ম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, তবে পরীক্ষার সময় কোনো কর্মসূচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের অসুবিধায় ফেলবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) জানায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি এবং শিক্ষক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি। প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে থাকলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনো ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা গ্রেড উন্নয়ন ও উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধানসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন।
এর আগে ৮–১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে আশ্বাসে কর্মস্থলে ফিরলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হওয়ায় তারা আবার কর্মবিরতিতে যোগ দেন।
প্রসঙ্গত, রোববার শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে