সাংবাদিক আনিস আলমগীরের মুক্তির আহ্বান অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি বলেছে, মতপ্রকাশের কারণে কাউকে লক্ষ্যবস্তু করা একটি গভীরভাবে উদ্বেগজনক প্রবণতা।
গত ১৫ ডিসেম্বর আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ও আরও চারজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি রিহাব মাহমুর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তার একটি উদ্বেগজনক প্রবণতার ধারাবাহিকতা। নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের সমর্থক মনে করে বর্তমানে অনেককেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। মানুষের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহার না করে বরং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও কর্তৃপক্ষের উচিত নির্বাচনের আগে বাক-স্বাধীনতা ও সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তির (আইসিসিপিআর) বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং অবিলম্বে আনিস আলমগীরকে মুক্তি দিতে হবে।’
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, আদালতে আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। যারা ক্ষমতায় থাকে আমি তাদের প্রশ্ন করি। দুই দশক ধরে আমি এটাই করে আসছি। কারও কাছে মাথা নত করা আমার কাজ নয়।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরও উল্লেখ করে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। একটি অধিকারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হলে রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার রক্ষা এবং ভয়মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য কঠোর ও দমনমূলক আইনের ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের একটি জিম থেকে বের হওয়ার সময় আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে নেয়। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন— অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ফ্যাশন মডেল মারিয়া কিসপট্টা এবং উপস্থাপক ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে