Views Bangladesh Logo

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বায়দূষণে বছরে প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

ক্ষিণ এশিয়ার ইন্দো–গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চল (আইজিপি–এইচএফ)–এর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। এর ফলে এ অঞ্চলে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন ‘আ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো–গাঙ্গেয় প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’–এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন খাত ও প্রশাসনিক পর্যায়ে সমন্বিত ও নির্দিষ্ট কিছু উদ্যোগ একযোগে বাস্তবায়ন করা গেলে বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে জনস্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও জোরদার হবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ অঞ্চলের পাঁচ দেশে বায়ুদূষণের প্রধান উৎস পাঁচটি—রান্না ও গরমের কাজে ঘরে কঠিন জ্বালানি পোড়ানো; পর্যাপ্ত ফিল্টার প্রযুক্তি ছাড়া শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি ও বায়োমাসের অদক্ষ ব্যবহার; অকার্যকর অভ্যন্তরীণ দহন ইঞ্জিনচালিত যানবাহন; কৃষিতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো ও সার–পশুবর্জ্যের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা; এবং ঘর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে প্রতিবেদনে সহজে গ্রহণযোগ্য ও বড় পরিসরে বাস্তবায়নযোগ্য কয়েকটি সমাধানের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎচালিত রান্নাব্যবস্থা চালু করা; শিল্পকারখানার বয়লার, চুল্লি ও ভাটার বিদ্যুতায়ন ও আধুনিকীকরণ; অ-মোটরচালিত ও বৈদ্যুতিক পরিবহন ব্যবস্থার বিস্তার; ফসলের অবশিষ্টাংশ ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা; এবং বর্জ্য আলাদা করা, পুনর্ব্যবহার ও নিরাপদ নিষ্পত্তির কার্যকর পদ্ধতি।

নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে প্রতিবেদনে তিনটি পরস্পর–সংযুক্ত সমাধানের কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমত, রান্না, শিল্প, পরিবহন, কৃষি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উৎস পর্যায়ে নির্গমন কমানো। দ্বিতীয়ত, রূপান্তরকালীন সময়ে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা জোরদার করা। তৃতীয়ত, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও নীতিনির্ধারণী কাঠামো, বাজারভিত্তিক উপকরণ এবং আঞ্চলিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বহুখাতভিত্তিক অগ্রগতি ধরে রাখা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও প্রমাণভিত্তিক এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য বড় পরিসরে বাস্তবায়নের একটি কার্যকর রূপরেখা দিচ্ছে। তাঁর মতে, পরিষ্কার প্রযুক্তি ও পদ্ধতি গ্রহণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও কৃষকদের জন্য শক্ত আর্থিক ও অর্থনৈতিক যুক্তি রয়েছে।

প্রতিবেদনটি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ‘চারটি আই’—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো—এর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, পরিষ্কার বায়ু অর্জনে ধারাবাহিক সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে শক্ত বাস্তবায়ন অপরিহার্য। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলে দূষণ কমিয়ে লাখো প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ