রংপুরে ৫৬০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
কিডনি, ক্যান্সার ও হৃদরোগের জন্য রংপুরে ৫৬০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করবে সরকার বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
নূরজাহান বেগম বলেন, ইতোমধ্যে হাসপাতাল নির্মাণের বাজেটও অনুমোদন করা হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেককে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ কারণে সরকার এই বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদে না হলেও আগামী সরকার এ কাজ বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, ই-জিপির মাধ্যমে হাসপাতালগুলোর সরঞ্জামাদি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম ও সিন্ডিকেট অনেকাংশেই নির্মূল করা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, করোনাকালে অনেক ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস্টসহ চিকিৎসা সেবার সঙ্গে জড়িত অনেকে মারা গেছেন। তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে, কারণ তাদের অবদান ভোলার মতো নয়। তারপরও যারা সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই যে আন্দোলন হলো- কেউ হাত হারিয়েছে, কেউ পা, আবার কারও চোখ নষ্ট হয়েছে। যারা সিন্ডিকেট করে তারা এগুলো দেখেনি। তাদের মধ্যে কি কোনো পরিবর্তন হবে না? কাজেই আমার-আপনার সবার মধ্যে যদি পরিবর্তন না আসে তবে দেশের পরিবর্তন হবে কেমন করে? প্রত্যেককে ভাবতে হবে, আমি কী করছি।
চীনের হাসপাতাল কোথায় হবে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি এসেছি। আজ জায়গা দেখবো। আমি দেখলে তো হবে না। যারা এই হাসপাতাল বানাবে। তারা দেখবে। যেহেতু এটা চাইনিজ সরকার বানাবে। সেকারণে আমি যাওয়ার পর চাইনিজ রাষ্ট্রদূত আসবেন। তারপর এটা সিদ্ধান্ত হবে কোথায় হবে।
রংপুর মা ও শিশু হাসপাতাল চালু হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, শিশু হাসপাতাল না হওয়ার কোনো কারণ নাই। যেকোনো কিছু করতে হলে, একটা যদি ঘোড়ার গাড়ি চালাতে যাই, ঘোড়ার সঙ্গে আমার গাড়িটা লাগবে। রশি লাগে, চাকা লাগে। শুধু ঘোড়া দিয়ে দিলেই তো গাড়ি হবে না। হাসপাতালও সেরকম। হাসপাতাল করতে হলে তার জনবল লাগবে। এখানে জনবলের কোনো পরিকল্পনা করে নাই। যন্ত্রপাতির পরিকল্পনা কিছু করেছে কিছু করে নাই। কাজেই আমরা হঠাৎ করেই এগুলো এনে দিতে পারবো না। কাজেই আমরা আস্তেধীরে এগুলো করবো। আমি ফিরে গিয়ে দেখি কি করতে পারি। যত দ্রুত সম্ভব চালু করা যায় কিনা।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার অব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোর সেবার মান উন্নয়নে বিশেষ নজর দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক ও নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ সময় রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান ও সিভিল সার্জন ডা. শাহিন সুলতানাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। তার আগে তিনি তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। বিকেলে নীলফামারী সদর উপজেলার দারোয়ানী টেক্সটাইল মিলে নতুন প্রস্তাবিত হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন তিনি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে