সরকারি সেবা নিতে ৩২% নাগরিককে ঘুষ দিতে হয়েছে: বিবিএস
গত এক বছরে সরকারি সেবা নিতে গিয়ে দেশের প্রায় ৩২ শতাংশ নাগরিক ঘুষ বা দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ, প্রতি তিনজন সেবাগ্রহীতার মধ্যে একজনকে সরকারি সেবা নিতে ঘুষ দিতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৪’-এ এ তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
বিবিএস জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশের ৪৫ হাজার ৮৮৮টি খানার ৮৪ হাজার ৮০৭ জন নারী-পুরুষ এই জরিপে অংশ নেন।
জরিপ অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ঘুষ লেনদেন হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে। গত এক বছরে সেখানে সেবা নিতে যাওয়া ৬৩.২৯ শতাংশ সেবাগ্রহীতা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এর পরের অবস্থানে রয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো, যেখানে ৬২.৯৪ শতাংশ সেবাগ্রহীতা ঘুষ দিতে হয়েছে। পাসপোর্ট অফিসে এ হার ৫৭.৪৫ শতাংশ এবং ভূমি নিবন্ধন অফিসে ৫৪.৯২ শতাংশ।
জরিপে দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও উঠে আসে। এতে দেখা যায়, ৮৪.৮১ শতাংশ নাগরিক সন্ধ্যার পর নিজ এলাকায় একা চলাফেরাকে নিরাপদ মনে করেন। তবে নারী-পুরুষের নিরাপত্তাবোধে পার্থক্য রয়েছে।
পুরুষদের মধ্যে ৮৯.৫৩ শতাংশ একা চলাফেরায় নিরাপদ বোধ করলেও নারীদের ক্ষেত্রে এ হার ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজন নারীর একজন সন্ধ্যার পর একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন না।
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে মত প্রকাশের সুযোগ সম্পর্কেও মতামত দিয়েছেন নাগরিকরা। জরিপ অনুসারে, মাত্র ২৭.২৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন তারা সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে মতামত জানাতে পারেন।
এ ছাড়া, গত এক বছরে দেশের ১৯.৩১ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এতে নারীদের বৈষম্যের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি বলে জরিপে উঠে এসেছে।
বিবিএসের এ জরিপে সেবাপ্রাপ্তি, নাগরিক অধিকার, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক মত প্রকাশের পরিস্থিতি নিয়ে সমাজের বাস্তবচিত্র উঠে এসেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে