Views Bangladesh Logo

ঝিনাইদহে এ বছর বাল্যবিয়ের শিকার ২১৩ কিশোরী

লতি বছর ঝিনাইদহ জেলায় এসএসসি পরীক্ষার আগে ২১৩ জন কিশোরীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। অভিভাবকরা সন্তানদের পরীক্ষার ফরম পূরণ করলেও এই কিশোরীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসের এক জরিপে এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করলে বাল্যবিয়ের এই চিত্র উঠে এসেছে।

জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ৬৬ জন বালক ও ২০৪ জন বালিকা অনুপস্থিত ছিল। এই ২০৪ জন বালিকার মধ্যে ১৭৪ জনের বাল্যবিয়ে হয়েছে। এছাড়া দাখিল পরীক্ষায় ৩৩ জন এবং ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৬ জন কিশোরীর বাল্যবিয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছর (২০২৪) জেলার ছয় উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষার আগে ২৫৭ জন কিশোরীর বাল্যবিয়ে হয়েছিল।

বাল্যবিয়ে নিয়ে কাজ করা সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলো জানায়, ঝিনাইদহে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে গোপনে কিশোরীদের বিয়ে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে সমাজে তালাক ও বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা বাড়ছে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি সক্রিয় থাকলেও এই প্রবণতা রোধে তারা হিমশিম খাচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন বাল্যবিয়ে ঠেকাতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করলেও তা কাঙ্ক্ষিত ফল দিচ্ছে না।

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, “বালিকাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে গরহাজিরের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা গেছে, জেলায় ২১৩ জন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।”

জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা আফরোজা পারভীন বলেন, “জন্ম নিবন্ধনে বয়স বাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তখন আমরা জানতে পারি। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কিশোরীকে গোপনে স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করা সংগঠন আরডিসি’র নির্বাহী প্রধান আব্দুর রহমান বলেন, “এসএসসি পরীক্ষার পর বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কমে যাওয়ার বিষয়টি তিনি তুলছিলেন। ওই সভায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিস ছয় উপজেলায় জরিপ চালিয়ে বাল্যবিয়ের এই তথ্য পায়।”

তিনি আরও বলেন, “বাল্যবিয়ে রোধ করতে না পারা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়।”

ঝিনাইদহ জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সি ফিরোজা সুলতানা বলেন, “এই বিয়ের বিষয়ে প্রশাসনের বিন্দুমাত্র গাফিলতি নেই। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটিতে যারা আছেন, সবাই আন্তরিক। কিন্তু গোপনে ও স্থান পরিবর্তন করে বিয়ে দেওয়ার কারণে এসব খবর আমরা জানতে পারিনি।”

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ