ভৈরব জেলার দাবিতে রেলপথ অবরোধ, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে আহত ২০
‘জেলা জেলা জেলা চাই, ভৈরব জেলা চাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, কিশোরগঞ্জ নো মোর’, ‘ইন্টেরিম সরকার, জেলা মোদের দরকার’— এমন স্লোগানে সোমবার সকালে উত্তাল হয়ে ওঠে ভৈরবের রেলপথ।
নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে সাধারণ মানুষ। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে।
যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও রেলওয়ে পুলিশ ট্রেন চালু করতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে আশুগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)সহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
রেলপথ অবরোধের কারণে পাঁচটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস দীর্ঘ সময় ভৈরবে আটকে ছিল। ঢাকাগামী মালবাহী ট্রেন নরসিংদীর দৌলতকান্দি স্টেশনে, তিতাস ট্রেন মেথিকান্দায়, কর্ণফুলী ট্রেন খানাবাড়ি স্টেশনে এবং চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালশহর স্টেশনে আটকে পড়ে।
১ ঘণ্টা ১০ মিনিট কর্ণফুলী এক্সপ্রেস আটকে থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হয়।
১১ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের পর থেকেই ভৈরববাসীর মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে জেলার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
এ আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, ছাত্রশিবির, গণ অধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
আজকের রেল অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন, ছাত্রনেতা জাহিদুল, মওলানা শাহরিয়ার, গোলাম মহিউদ্দিন ও মুহাম্মদ জুনায়েদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৫ দিন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেও সরকারের টনক নড়েনি। তাই আজ রেল অবরোধ করা হয়েছে, আগামীকাল নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। সরকার জেলার দাবি না মানলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ করে দেয়া হবে।
পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ছাত্রনেতা শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বানচাল করতে একটি মহল পাথর নিক্ষেপ করেছে। আমরা যাত্রীদের দুর্ভোগ বিবেচনা করে ট্রেন ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রেলওয়ে থানার ওসি সাইদ আহমেদ জানান, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত চলছে, দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ ইউসুফ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রেল অবরোধ ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে