বালি বিমানবন্দরে ৫৫ ঘণ্টা আটকা দুই বাংলাদেশি
বাতিক এয়ারের (সাবেক মালিন্দো এয়ার) চরম অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিগামী দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গত ৫৫ ঘণ্টা ধরে ইন্দোনেশিয়ার বালি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে রয়েছেন। এতে তারা শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে অংশ নিতে পারেননি। ঘটনায় উদ্বেগে রয়েছেন তাদের পরিবার-পরিজন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন আদনান আল মাহমুদ ও মুকসিনুল হোসেন। তারা গত ১২ জুলাই (শনিবার) রাতে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর হয়ে সিডনির উদ্দেশে রওনা দেন; কিন্তু নির্ধারিত রুটে না গিয়ে তাদের ফ্লাইটটি অপ্রত্যাশিতভাবে অবতরণ করে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে।
আদনানের মা মাহমুদা আক্তার জানান, প্রথমে বিমানকর্মীরা বলেছিলেন এটি মাত্র এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি। যাত্রীরা প্লেনেই অবস্থান করবেন; কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পর সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয় বালি বিমানবন্দরে।
অন্যান্য যাত্রীদের বিকল্প ফ্লাইট ও হোটেলের ব্যবস্থা করা হলেও দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বিমানবন্দরের চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয় প্রায় ৩১ ঘণ্টা। ১৪ জুলাই দুপুরে তাদের লাউঞ্জে নেয়া হলেও এখনো তারা বিমানবন্দরেই অবস্থান করছেন। এ সময় তাদের পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাসও নিয়ে রাখা হয়।
আদনানের মা বলেন, “আমার ছেলের সোমবার সিডনির বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন ক্লাস ছিল। এখন তারা না পৌঁছানোয় কী সিদ্ধান্ত হবে জানি না। আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।”
ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের পরিবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং বাতিক এয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাতিক এয়ারের ঢাকা অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বালি ছিল একটি ‘কারিগরি স্টপওভার’। ফ্লাইটটিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যাত্রীদের বিমানবন্দরে নামাতে হয়। তবে বালিতে ৮ ঘণ্টার বেশি ট্রানজিটে থাকলে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রয়োজন হয়। যেহেতু ওই দুই শিক্ষার্থীর ভিসা ছিল না, তাই তাদের পরবর্তী ফ্লাইটে উঠতে দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'এটি অবশ্যই এয়ারলাইন্সের দায়িত্ব। আমরা শুনেছি, তাদের কুয়ালালামপুরে ফেরত পাঠিয়ে রাতেই বিকল্প ফ্লাইটে সিডনি পাঠানো হবে।'
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে