১৩ সেনা কর্মকর্তাকে আনা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে , নিরাপত্তা জোরদার
টিএফআই–জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এ সকাল থেকেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিকী, সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ একাধিক উচ্চপদস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল চত্বর এবং আশপাশের এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে আজ গ্রেপ্তার হওয়া ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে হাজির করা হবে। আজকের শুনানিতে তাদের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ফেরত প্রতিবেদন দাখিল হতে পারে। একই সঙ্গে পলাতক শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিকী ও আসাদুজ্জামান খানের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের আদেশও দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত ২২ অক্টোবর গুমের দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর এই ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নির্ধারিত ২০ নভেম্বরের শুনানি পিছিয়ে আজ ২৩ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
এর আগে ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
বর্তমানে ঢাকা সেনানিবাসের সাময়িক কারাগারে রাখা ১৩ কর্মকর্তার মধ্যে আছেন—
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহবুব আলম, কেএম আজাদ; কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবছুটি); লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন, সারোয়ার বিন কাশেম; মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন; ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।
১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িক কারাগার ঘোষণা করা হয়, যেখানে বর্তমানে অভিযুক্তদের রাখা হয়েছে।
টিএফআই–র্যাব টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেলের গোপন চেম্বারে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আলাদা মামলায় জেআইসি বা ‘আয়নাঘর’–এ গুমের অভিযোগে আরও ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। উভয় মামলায় শেখ হাসিনা ও তারেক সিদ্দিকীর নাম রয়েছে।
আজকের শুনানি শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে—তা এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে