দ্বিতীয় দিনে সেন্ট মার্টিন গেলেন আরও ১১৯৪ পর্যটক
কক্সবাজারে জাহাজ চলাচল শুরুর পর দ্বিতীয় দিনেও পর্যটকের ভালো সমাগম দেখা গেছে। আজ মঙ্গলবার তিনটি জাহাজে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে গেছেন ১ হাজার ১৯৪ জন পর্যটক। গতকাল প্রথম দিনে গিয়েছিলেন ১ হাজার ১৭৪ জন। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি রয়েছে।
আজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছাটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজ তিনটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে জাহাজগুলো দুপুর দেড়টার দিকে দ্বীপে পৌঁছে। বিকেল তিনটার দিকে আগের দিন যাওয়া পর্যটকদের নিয়ে তারা আবার কক্সবাজারে ফিরবে। ডিসেম্বর–জানুয়ারির পুরো দুই মাস পর্যটকেরা দ্বীপে ভ্রমণ ও রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন।
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রথম দিনের তুলনায় আজ মাত্র ২০ জন বেশি পর্যটক ভ্রমণে গেছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটকের অনুমতি থাকলেও বাস্তবে প্রায় ৮০০ জন কম আসছেন। এতে জাহাজমালিকেরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন। গত বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মোট প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার পর্যটক দ্বীপে গিয়েছিলেন।
হোটেল–রেস্তোরাঁ মালিক, জাহাজের ব্যবস্থাপক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কঠোর নিয়মকানুন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেকে আগাম বুকিং ও জাহাজের টিকিট বাতিল করছেন। এতে ভ্রমণ কমে গেছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হলেও রাত যাপনের সুযোগ ছিল না। এরপর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—এই দুই মাস রাত যাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলতে পারবে না। টিকিট অবশ্যই ট্যুরিজম বোর্ডের অনলাইন পোর্টাল থেকে কিনতে হবে এবং প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড না থাকলে টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে ঢোকা, কেয়ার ফল সংগ্রহ, সামুদ্রিক প্রাণী ও প্রবাল ক্ষতি করা নিষিদ্ধ। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি–বাইকসহ যেকোনো মোটরযান চালানো, পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বহন বা ব্যবহারও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয় থেকে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। কিউআর কোডবিহীন টিকিটে জাহাজ মালিককে জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি পর্যটক যেতে পারবেন না। যাত্রীরা জাহাজে ওঠার সময় প্লাস্টিক বহন করছেন কি না—সেটিও তদারকিতে রয়েছে।
জাহাজে যাতায়াত ও দ্বীপে অবস্থানে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্ট মার্টিনকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। পরে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি দ্বীপসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১,৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা ‘সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে